নমস্কার বন্ধুরা, আজ আমরা জীবনানন্দ দাশ প্রবন্ধ রচনা pdf পোস্ট উপস্থাপন করছি। জীবনানন্দ দাশ জীবনী pdf ইন্টারনেটে অনেক পেয়ে যাবেন তবে আমরা যে রচনাটি উপস্থাপিত করছি আশা করছি সবার ভালো লাগবে।
ভূমিকা
রবীন্দ্র-পরবর্তী বাংলা কবিতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি হলেন জীবনানন্দ দাশ। তিনি শুধু নগরসভ্যতার নাগরিক কবি নন, আবার গ্রামবাংলার শুধু প্রকৃতিপ্রেমিক কবিও নন, তাঁর কবিতায় ঘটেছিল এ দুয়ের এক আশ্চর্য সংমিশ্রণ। অন্যদিকে তাঁর কবিতায় যেমন প্রেম আছে তেমনি অপ্রেমের কথাও তিনি বলেন, ভালোবাসার পাশাপাশি রণ-রক্ত সফলতাও তাঁর কবিতায় ভিন্ন ব্যঞ্জনা যোগ করে। পরবর্তীকালের বাংলা কবিতাকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেছেন কবি জীবনানন্দ দাশ।
জন্ম ও বংশ পরিচয়
জীবনানন্দের জন্ম ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের ১৭ ফেব্রুয়ারি বর্তমান বাংলাদেশের বরিশাল শহরে। তাঁর বাবার নাম সত্যানন্দ দাশ, মা কবি কুসুমকুমারী দেবী।
ছাত্রজীবন
১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে জীবনানন্দ ব্রজমোহন স্কুলে ভরতি হন। ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে ১৯১৯-এ প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্সসহ বি এ পাস করে জীবনানন্দ কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতি হন। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে এখান থেকেই তিনি ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে এম এ পাস করেন।
কর্মজীবন
জীবনানন্দ কর্মজীবন শুরু করেন ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে। ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি সিটি কলেজে অধ্যাপনা করেন। পরে বিভিন্ন সময়ে তিনি খুলনা জেলার বাগেরহাট কলেজে, দিল্লির রামযশ কলেজে, খড়গপুর কলেজে, বড়িশা কলেজে পড়ান। অবশেষে ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের জুলাই থেকে তিনি হাওড়া গার্লস কলেজে আমৃত্যু অধ্যাপনা করেন।
সাহিত্যসাধনা
জীবনানন্দের রচিত হ’ল কাব্যগুলি— ‘ঝরা পালক’ (১৯২৭), ‘ধূসর পাণ্ডুলিপি’ (১৯৩৬), ‘বনলতা সেন’ (১৯৪২), ‘মহাপৃথিবী’ (১৯৪৪), ‘সাতটি তারার তিমির’ (১৯৪৮), ‘রূপসী বাংলা’ (১৯৫৭), ‘বেলা-অবেলা কালবেলা’ (১৯৬১)। এই কাব্যগুলি থেকে কবির নিজস্ব রূপ নির্মাণের কয়েকটি অভিনবত্ব চোখে পড়ে। যেমন—
ক. তিনি গ্রাম বাংলার নিসর্গ সৌন্দর্যকে উপস্থাপন করেছেন।
খ. বর্তমানের হতশ্রী রূপ, মানবতার বিপন্নতা, নগরজীবনের অন্তঃসারশূন্যতা দেখেছেন।
গ. তাঁর কবিতায় ইতিহাস চেতনা, মৃত্যু চেতনা এবং প্রেমচেতনা অত্যন্ত প্রবল।
মৃত্যু
১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের ১৪ অক্টোবর কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কের কাছে ল্যান্সডাউনে রাস্তা পারাপারের সময় ট্রাম দুর্ঘটনায় জীবনানন্দ দাশ আহত হন। কাছেই শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে তাঁকে ভরতি করা হয়। সেখানে ২২ অক্টোবর রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
উপসংহার
শতাব্দীর ব্যবধানে দাঁড়িয়ে আজ নজরুল ইসলামকে মনে হয় পুরোনো দিনের কবি, সুধীন্দ্রনাথ, বিষ্ণু দে-কে মনে হয় শিক্ষিতজনের কবি। কিন্তু জীবনানন্দ আপামর বাঙালির কবি। জীবনানন্দকে তাই আমাদের বহন করতে হয় না, তিনিই আমাদের বহন করে নিয়ে চলেন দুঃখ থেকে সুখে, সুখ থেকে আনন্দে, আনন্দ থেকে সাহিত্যরসের অমৃতলোকে।
Download PDF : জীবনানন্দ দাশ প্রবন্ধ রচনা
আরও দেখুনঃ