দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা Class 1-10 [PDF]

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা খুবই গুরুত্ব পূর্ণ রচনা। স্কুলের পরীক্ষায় এসে থাকে ।তাই সহজ সরল ভাষায় দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনাটি বর্ণনা করা হল।

ভূমিকা

সভ্যতার সেই ধুসর দিনে মানুষ একদিন প্রকৃতির রহস্যময় জীবনের দিকে চেয়ে থাকত প্রকৃতির খেয়ালখুশিতে নিয়ন্ত্রিত হয় তার জীবন। কিন্তু তার সেই অসহায় নিরুপায় জীবন ভালো লাগল না । সে চাইল প্রাকৃতিক ভয়ঙ্কর রূপকে ভেদ করতে, চাইল তার স্বপ্নকে সফল করে তুলতে । অবশেষে জলে স্থলে মহাশূন্যে মানুষ তার স্বপ্ন সাধনাকে পূর্ণ করেছে।

বিজ্ঞান কি?

যে জ্ঞান বিশেষ ভাবে লাভ করা যায় তা হল বিজ্ঞান । আজ আমাদের জন্ম মৃত্যুতে বিজ্ঞান শ্বাস-প্রশ্বাসে  বিজ্ঞান, চলা-ফেরায় বিজ্ঞান ,প্রত্যক্ষ পরোক্ষ বিজ্ঞান।

প্রতিদিনের জীবনে বিজ্ঞানের অবদান

যে বিজ্ঞান সৃষ্টি হয়েছিল মানুষের আত্মরক্ষার ও আত্মপ্রতিষ্ঠার প্রয়োজনে । আজ তা মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের নিত্যসঙ্গী। সকালে ঘুম থেকে উঠে দিন আরম্ভ করা থেকে শয্যাগ্রহন পর্যন্ত জীবন যাত্রার প্রতিটি পদক্ষেপে জন্ম থেকে মৃত্যু পযন্ত আমরা বিজ্ঞানের মুখাপেক্ষী।

চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞান

রোগ প্রতিরোধের জন্য পেনিসিলিয়ামের মত অ্যান্টি- বায়োটিকের আবিষ্কার চিকিৎসা জগতে এসেছে যুগান্তর রেডিয়াম অতিবেগুনী রশ্মি, X-Ray, E.C-G প্রভৃতি চিকিৎসা ক্ষেত্রে একটি বিস্ময়কর সংযোজন।হূৎপিন্ড পরিবর্তন, ব্রেন অপরেশন প্রভৃতি কাজের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বিজ্ঞানের অকুণ্ঠ দান।

কৃষিক্ষেত্রে বিজ্ঞান

বিজ্ঞানের আশীর্বাদ আজকের শুষ্ক পৃথিবীর যেন শস্যশ্যামলা হয়ে উঠেছে। বিজ্ঞান আজ চাষীর ঘরে তুলে দিয়েছে ট্রাকটর। বীজ ছড়ানোর যন্ত্র, আগাছ নিড়ানে এবং পাকা ফসল মাড়ার যন্ত্র, কীটনাশক ও জীবানু নাশক ঔষধ, রাসায়নিক সার এবং উন্নত মানের উচ্চ ফলনশীল বীজ । চাষীর প্রান যেন আজ বিজ্ঞানের দানে ভরপুর।

শিল্পক্ষেত্রে বিজ্ঞান

বিজ্ঞান ঘটিয়েছে শিল্পবিপ্লব পুরানোর অবসান ঘটিয়ে বিজ্ঞান মানুষকে করেছে চির আধুনিক, হাতে তুলে দিয়েছে কম্পিউটার ও উন্নত মানের বহু যন্ত্রপাতি, হাজার হাজার মানুষ যা করতে সময় নিচ্ছে বিজ্ঞান তা কয়েক সেকেন্ড করে দিচ্ছে।

পড়াশোনায় বিজ্ঞান

বর্তমান যুগে শিক্ষা-দীক্ষায় ও বিজ্ঞানের কল্যানহস্ত প্রসারিত। লেখনী সামগ্রী, কাগজ, কলম, পেনসিল রবার সবই বিজ্ঞানের দান ।এখন ঘরে বসেই ইন্টারনেট ওটিভি খুলে পড়াশোনার সামগ্রী যোগাড় করা যায়।

পরিবহনে বিজ্ঞান

 পরিবহন জগতে বিজ্ঞান এনেছে ক্ষিপ্রগতি। আজ বিজ্ঞানের কল্যানে মানুষ নিমিশে এদেশ থেকে অন্য দেশে চলে যেতে পারে। মানুষ আজ পৃথিবীর সীমা ছাড়িয়ে অসীম আকাশে পাড়ি দিচ্ছে বিজ্ঞানের দানে।

মহাকাশ গবেষণায় বিজ্ঞান

মানুষ আজ মহাকাশে উপগ্রহ পাঠিয়ে আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাচ্ছে এবং উপগ্রহ প্রেরিত ছবি দেখে আগামী দিনে গ্রহান্তরে পাড়ি দেবার চেষ্টা করছে।

অবসর বিনোদনে বিজ্ঞান

মানুষের কর্মজীবনে ক্লান্তি দূরীকরণের জন্য বিনোদনের জন্য সামগ্রী যোগান দিচ্ছে বিজ্ঞান, দিয়েছে দূরদর্শন, বেতার, চলচ্চিত্র ভিডিও গেম, মোবাইলের মতো সামগ্রী।

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের কুফল

সুফলের সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞান কিছু কুফল বহন করে নিয়ে এসেছে । যেমন –

 যন্ত্র সর্বস্বতা : আজ আমরা অবশেষে সুখ লাভের আশায় হয়ে পড়েছি যন্ত্র সর্বত্র যান্ত্রিকতা আজ আমাদের গ্রাস করেছে বিজ্ঞান নির্মিত যন্ত্র। আজ চা বানাই, ঘর মুছি, লিফট আমাদের তুলে দেয় বহুতল গছে । বিজ্ঞানের এই সব যান্ত্রিকতা আমাদের জীবনকে কৃত্রিম করে তুলেছে।

পরমাণু বোমার আতঙ্ক : বিজ্ঞানীরা বিশ্বের উন্নতির জন্য নির্মাণ করলেন পরমাণু বোমা, কিন্তু যুদ্ধবাজ সাম্রাজ্যবাদীরা বিজ্ঞানের অপ- প্রয়োগ করে লক্ষ লক্ষ প্রানের বিনাশ সাধন করতে দ্বিধা বোধ করেনি। পরমাণু বোমার আতঙ্কে হিরোসিমা ও নাগাসাকি বীভৎসতায় আজকের মানুষ আতঙ্কিত।

উপসংহার

দোষ কার- মানুষের না বিজ্ঞানের বিজ্ঞান তো মানুষেরই সৃষ্টি, তারই  আঞার গোলাম, গোলামকে যেমন হুকুম দেওয়া যায়, সে তেমনই কাজ করে। তাই  বিজ্ঞানকে সব ক্ষেত্রে দোষ দিয়ে লাভ নেই। মন্ত্রকেকাজে লাগাতে গিয়ে মানুষ যদি যন্ত্রের উপরই নির্ভরশীল হয়ে পড়ে, তাহলে যন্ত্রই একদিন মানুষকে গিলে ফেলবে। মানুষ তা হতে দেবে কিনা, তা মানুষই ঠিক করবে।

আরও পড়ুনঃ

দূর্গাপূজা-বাংলা রচনা

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু রচনা

Leave a Comment