শব্দ দূষণের প্রতিকার | Remedies for noise pollution

অবাঞ্ছিত শব্দ মানুষের মধ্যে অস্বস্তির সৃষ্টি করে। সে কারণে কোলাহল বা অতিরিক্ত অবাঞ্ছিত শব্দ, দূষণের পর্যায়ে পড়ে। প্রতিনিয়ত শব্দ দূষণের মাত্রা বেড়ে চলেছে যার ফলস্বরূপ মানব জীবনের ওপর প্রভাব ফেলছে। 

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ করার উপায়  

শব্দদূষণ তিনভাবে প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যেমন – (১)প্রযুক্তিগত উপায়ে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ (২)আইনগত উপায়ে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ (৩)ব্যক্তিগত এবং জনশিক্ষার মাধ্যমে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ।

প্রযুক্তিগত উপায়ে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ

 (১) কারখানা বা শিল্পসংস্থায় কর্কশ শব্দ উৎপাদনকারী যন্ত্রপাতির প্রযুক্তিগত উন্নতি ঘটিয়ে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। একে উৎসস্থলের (at source) শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বলে।

(২) যে সমস্ত যন্ত্রপাতি থেকে অবাঞ্ছিত শব্দ তৈরি হয় সেই ধরনের যন্ত্রপাতির ওপর শব্দ প্রতিরোধ আচ্ছাদন ব্যবহার করেও শব্দদূষণ প্রতিরোধ করা যায়।

(৩) যে সমস্ত জায়গায় ৮০ dB (ডেসিবেল)-এর বেশি শব্দ সৃষ্টি হয় সেখানে অবাঞ্ছিত শব্দ প্রতিরোধ করার জন্য ইয়ার প্লাগ (Ear Plug), ক্যানাল ক্যাপ (Canal Cap), ইয়ার মাফ (Ear Muff) ব্যবহার করা দরকার।

(৪) যে সমস্ত কলকারখানায় প্রচণ্ড শব্দ হয় সেখানে শব্দদূষণ প্রতিরোধ করার জন্য শব্দ প্রতিরোধী এলাকা (Acoustic Zone) তৈরি করার প্রয়োজন হয়।

আইনগত উপায়ে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ

 হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আদালত এবং দরকারমতো অন্যান্য এলাকাগুলিতে অবাঞ্ছিত শব্দ আইন করে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যেমন –

(১) শিল্পাঞ্চলে শব্দের মাত্রা ৭৫ ডেসিবেলের কম থাকবে।

 (২) বাণিজ্যিক অঞ্চলে শব্দের মাত্রা ৬৫ ডেসিবেলের কম থাকবে।

(৩) বসতি অঞ্চলে শব্দের মাত্রা ৫৫ ডেসিবেলের কম থাকবে।

(৪) হাসপাতাল, আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদির ১০০ মিটারের মধ্যে কোনো ধরনের অবাঞ্ছিত শব্দ করা যাবে না। জিন অনুসারে একে নিঃশব্দ অঞ্চল বা সাইলেন্স জোন (Silence Zone) বলে।

 (৫) রাত্রি ১০টা থেকে সকাল ৬টার মধ্যে বিশেষ অনুমতি ছাড়া খোলা জায়গায় জোরে লাউড স্পিকার (পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেম) চালানো যাবে না।

ব্যক্তিগত এবং জনশিক্ষার মাধ্যমে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ।

ব্যক্তিগত উপায়ে নানাভাবে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়, যেমন —

(১) স্কুটার, মোটর সাইকেল, মোটরগাড়ি প্রভৃতি যানবাহন চালানোর সময়ে অযথা হর্ন দেওয়া বন্ধ করলে শব্দদূষণ কমে।

(২) রাস্তার দু-পাশে গাছপালা লাগিয়ে শব্দদূষণ মুক্ত এলাকা গড়ে তোলা যায়।

 (৩) আতসবাজি পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ করা হলে তীব্র শব্দ করা বোমা, পটকা ফাটানো বন্ধ হয়। এভাবেও শব্দদূষণ কমে।

(৪) বিয়ে, জন্মদিন এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত আনন্দ-অনুষ্ঠানে 65 dB এর নীচে মাইক চালানো হলে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রিত হয়।

(৫) শব্দদূষণের খারাপ প্রতিক্রিয়াগুলি সম্পর্কে ছেলেমেয়ে, বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়স্বজনকে ঠিকমতো বোঝাতে পারলে শব্দদূষণের তীব্রতা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

(৬) জনগণের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলে শব্দদূষণ কমানো যায়।

FAQ:- শব্দ দূষণের প্রতিকার

1. শব্দের মাত্রা পরিমাপের একক কি?

শব্দের মাত্রা পরিমাপের একক ডেসিবেল।

2. শব্দ দূষণের প্রতিকার কি?

শব্দদূষণকে প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণ করা।

3. শব্দ দূষণের প্রভাব কি কি?

শব্দ দূষণের ফলে – মাথা ঝিমঝিম করে, বমিভাব আসে, স্নায়ু উত্তেজিত হয়।

আরও দেখুনঃ

বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব

জল দূষণের কারণ ও ফলাফল

Leave a Comment