বাঘ রচনা নিচে সুন্দর ভাবে সহজ সরল ভাষায় বর্ণনা করা হল।
ভূমিকা
বাংলার জাতীয় পশু রয়েল বেঙ্গল টাইগার। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণে অবস্থিত সুন্দর বনে এদের অবস্থান । সেখানকার নানা প্রজাতির বন্যপ্রানীর মধ্যে অন্যতম স্তন্যপায়ী প্রানী বাঘ। রয়েল বেঙ্গল টাইগার সারা বিশ্বে বাংলার পরিচয় বহন করে।
বাঘের পরিচিতি
বাঘ বড় বিড়াল জাতের অন্তর্ভুক্ত একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী, সিংহ, চিতাবাস ও জাগুয়ারের সঙ্গে প্যানথেরা গণের চারটি বিশালাকার সদস্যের মধ্যে এটি সর্ববৃহৎ ও শক্তিশালী প্রাণী বাঘ ফেলিডি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত সবচেয়ে বড় প্রাণী।
বাসস্থান
বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে বিখ্যাত রয়্যাল বেঙ্গলে টাইগার ছাড়াও নেপাল এবং ভূটানের বন জঙ্গলেও বাঘ দেখা যায়। ভারত সহ অশিয়ার অনেক দেশে যেমন চীন, রাশিয়া, সুমাত্রায় বাঘের বাস দেখা যায়। বাঘ সাধারণত নির্জন জঙ্গলে ও নদী নালার ধারে বাস করতে ভালোবাসে, উষ্ণমণ্ডলীয় অরন্য, ম্যানগ্রোভ ভল জলাভূমি, পত্রমোচী বন সবত্রই এরা বসবাস করতে পারে।
আকৃতি
বাঘ একটি চতুষ্পদ মাংসাশী হিংস্র জন্তু। এদের গায়ের রং হলুদ এবং তার ওপরে কালো ডোরা কাটা দাগ থাকে। অনেক বাঘ আবার সাদা ও সোনালী রং এর হয় কিন্তু এদের সংখ্যা খুবই কম। বাঘের মুখ গোলাকার চোখ দুটো উজ্জ্বল ও তীক্ষ্ণ দৃষ্টিসম্পন্ন, মুখে গোঁফ আছে। বাঘ লম্বায় ১০-১১ ফুট এবং ওজনে ৩০০ কিগ্রা পর্যন্ত হতে পারে। এদের পায়ের তলায় নরম মাংসপিণ্ড আছে যার ফলে তারা নীরবে চলাফেরা করতে পারে এবং সহজে শিকার ধরতে পারে।
স্বভাব
বাঘ সাধারনত নিঃসঙ্গ। কখনো কখোনো জোড়া বেঁধে থাকে। এরা প্রধানত নিশাচর। এরা গরু, মহিষ, হরিন, বুনো শূকর ইত্যাদি শিকার করে খায়ে। এরা দ্বিগুন বড় জন্তু শিকার করতে পারে। বাঘিনি একসঙ্গে ২টি থেকে ৫টি বাচ্চা প্রসব করে। একটি পূর্ণবয়স্ক বাঘের দৈনিক মাংস চাহিদা গড়ে ৮-৯ কেজি। এরা জলেও খুব ভালো সাঁতার কাটতে পারে।
বাঘ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা
1973 সালের মধ্যে বাঘের সংখ্যা দ্রুত হারে হ্রাস পেতে শুরু করে। বর্তমানে বাঘের ৮টি উপপ্রজাতির মধ্যে পাঁচটি এখনও জীবিত। এদের বিপন্নতার প্রধান কারণ আবাসভূমি উদ্বুদ, খাবারের অভাব, চামড়া ও দাঁতের জন্য অবৈধ শিকার আরো বিভিন্ন কারণের ফলে বাঘ আজ বিলুপ্তির পথে কিন্তু প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার্থে এদের বিলুপ্তির থেকে রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য।
উপসংহার
বাঘের শক্তি-সাহস ও সৌন্দর্য্যের কথা মনে রেখেই ১৯৭৩ সালে টাইগার প্রজেক্ট শুরু হবার পর ভারত সরকার রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে জাতীয় পশু হিসাবে ঘোষনা করে। প্রতি বছর ২৯ শে জুলাই সমগ্র বিশ্বে বাঘ সংরক্ষণের জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক ব্যাঘ্র দিবস বা বিশ্ব বাঘ দিবস পালিত হয়।
ময়ূর রচনা
FAQ:-
1.বাঘের গায়ের রং কি?
বাঘের গায়ের রং হলুদ ডরা ডরা আবার কিছু বাঘ সাদা রঙের হয়।
2. একটি বাঘ কত বছর বাঁচে?
একটি বাঘ ২৫-৩০ বছর বাঁচে।
3. বাঘের বৈজ্ঞানিক নাম কি?
বাঘের বৈজ্ঞানিক নাম পান্থেরা টাইগ্রিস।
4. ভারতে বাঘের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ কি?
ভারতে বাঘের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ খাদ্যের অভাব এবং চোরাশিকার।
আরও দেখুনঃ