পরীর গল্প – কাঠুরিয়া ও জল পরীর গল্প

নমস্কার বন্ধুরা, আমরা আজ তোমাদের জন্য পরীর গল্প নিয়ে একটি পোস্ট প্রস্তুত করেছি আশাকরি সবার ভালো লাগবে।

কাঠুরিয়া ও জল পরীর গল্প

কোনো এক বনে এক কাঠুরিয়া রোজ কাঠ কাটতে যেত। ভারি গরিব সে। দৈনিক কাঠ বিক্রি করে যা রোজগার করত তাই দিয়ে কোনোরকমে খেয়ে-পরে দিন চলত। একদিন এক নদীর ধারে সে গেল কাঠ কাটতে। সেখানে গিয়ে একটা গাছে যেই কুড়াল দিয়ে ঘা মেরেছে, অমনি তার হাত ফসকে কুড়ালটা গভীর জলের মধ্যে পড়ে গেল। খরস্রোতা নদী তা ছাড়া তাতে কুমিরের ভয় ছিল ভয়ানক।

তাই নিরুপায় হয়ে কাঠুরিয়া সেই গাছের গোড়ায় বসে কাঁদতে লাগল। সে এতই গরিব যে তার আবার একটা কুড়াল কেনার মতো সংগতি ছিল না। তাই কী উপায় করবে, গাছের গোড়ায় বসে বসে সে ভাবতে লাগল। যত ভাবে ততই তার চোখ দিয়ে জল পড়ে।

এমনি করে কিছুক্ষণ কেটে যাবার পর হঠাৎ এক জলপরী নদীর মধ্য থেকে উঠে দাঁড়িয়ে তাকে প্রশ্ন করল, তুমি কাঁদছ কেন?

কাঠুরিয়া বলল, আমি বড় গরিব, আমার কুড়ালটা জলে পড়ে গেছে, তাই কাঁদছি।

জলপরী বলল, আচ্ছা তোমার কুড়াল আমি এনে দিচ্ছি, তুমি কেঁদো না। এই বলে তৎক্ষণাৎ নদীতে ডুব দিয়ে একখানা সোনার কুড়াল তুলে এনে জলপরী জিজ্ঞাসা করল, এটা কি তোমার? কাঠুরিয়া ভালো করে দেখে বলল, না। সঙ্গে সঙ্গে আবার জলের মধ্যে ডুব দিয়ে একটা রুপার কুড়াল নিয়ে এসে জলপরী জিজ্ঞাসা করল, তবে এটা কি তোমার ? এবারও কাঠুরিয়া বিশেষ ভাবে পরীক্ষা করে বলল, না, এটাও নয়। তখন জলপরী আবার ডুব দিয়ে একটা লোহার কুড়াল এনে তাকে দেখাল।

কাঠুরিয়া এতক্ষণ পরে নিজের কুড়ালখানি চিনতে পেরে সানন্দে বলে উঠল, হ্যা, এটাই আমার। জলপরী কাঠুরিয়ার এই সততা দেখে মুগ্ধ হল। সে তাকে তার নিজের কুড়ালটি তো ফিরিয়ে দিলই, উপরন্তু সোনার ও রুপার কুড়াল দুটিও উপহার দিয়ে জলের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে গেল। এতখানি সোনা ও রুপা পেয়ে কাঠুরিয়ার অবস্থা বেশ ভালো হয়ে গেল। কেননা সেই কুড়াল দুটি বাজারে বিক্রি করে সে অনেক টাকা পেল, তাতেই তার দিন কাটতে লাগল খুব সুখে ও স্বচ্ছন্দে।

এদিকে হল কি, এই গল্পটি তার মুখ থেকে শোনার পর আর একজন কাঠুরিয়ার মনে বড় লোভ জন্মাল। সে একদিন চুপিচুপি সেই নদীর ধারে গাছ কাটতে গিয়ে ইচ্ছে করে তার কুড়ালটা জলের মধ্যে ফেলে তারপর সেখানে বসে অভিনয় করে কাঁদতে লাগল। তার কান্না শুনে আবার সেই জলপরী সেখানে আবির্ভূত হল।

পূর্বের মতো এবারও প্রথমে একটি সোনার কুড়াল তুলে সে তাকে জিজ্ঞাসা করল, এটা কি তোমার? সূর্যের আলো পড়ে সোনার কুড়ালটি ঝলমল করে উঠল। তাই দেখে কাঠুরিয়ার চোখ দুটি লোভে চকচক করে উঠল।

সে সঙ্গে সঙ্গে বলে ফেলল, হ্যা, এটাই আমার। তৎক্ষণাৎ জলপরী টুপ করে সেখানে ডুব দিয়ে কোথায় চলে গেল আর উঠল না। লোভী কাঠুরিয়াটি হায় হায় করতে লাগল এবং নিজের কপালে নিজে চড় মারতে মারতে বলল, হায়! হায়! কেন মিথ্যা কথা বলতে গেলাম, তাই তো আমার এমন শাস্তি হল! সোনার ও রুপার কুড়াল পাওয়া তো দূরে থাক, নিজের যে লোহার কুড়ালটি ছিল তাও হারালাম।

আরও দেখুনঃ

সেরা রূপকথার গল্প

বাংলা গল্প হাসির

গোপাল ভাঁড়ের ভুতের গল্প

Leave a Comment