তোমার দেখা একটি মেলা রচনা

ভূমিকা

 ‘মেল’ শব্দ থেকে মেলার উৎপত্তি। ‘মেল’ শব্দের আক্ষরিক অর্থ মিলন। আর মেলা হল মানবসমাজের সেই বৃহত্তর মিলনক্ষেত্র। মেলা হল মিলনের প্রাণ। মেলা হতে পারে কোনো ধর্মাচরণ, কোনো সামাজিক উপলক্ষ বা বিশেষ কোনো ব্যক্তিত্বের জন্ম-মৃত্যু ইত্যাদি নানা কিছুকে উপলক্ষ্য করে।

মেলার বর্ণনা

বাবা মার হাত ধরে জীবনে অনেক মেলাতেই যাওয়ার সুযোগ ঘটেছে আমার। নানা ধরনের মেলায় গিয়ে নানা অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছি আমি। কিন্তু আমার মনের মধ্যে চিরস্থায়ী হয়ে আছে আমার গ্রামের বিজয়া দশমী উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হওয়া মেলাটি,  দা-বঁটি-কোদাল, ধামা-কুলো-টুকরি, গোরুর গাড়ির চাকা, বারকোশ-লাঙল, তাঁতের বোনা কাপড়-চাদর- জানালার পর্দা, রকমারি মাটির আর কাঠের তৈরি পুতুল, মাটির নানাধরেনর পাত্র, বেলোয়ারি জিনিস, মনোহারী দ্রব্য-ফটো-সোনার রঙে জল করা গহনা-কাঁসা, পেতল, অ্যালুমিনিয়াম, স্টেনলেস স্টীলের থালাবাসন—গ্রামীণ হস্তশিল্প থেকে কারখানায় তৈরি দ্রব্যাদি কী নেই। প্রতিটি দোকানের সামনে উপচে পড়ছে মানুষের ভিড়। রাস্তার ধারে প্রায় এক কিলোমিটার জায়গা জুড়ে এই মেলা বসে। বিজয় দশমীতে ইচ্ছামতী নদীতে প্রতিমা নিরঞ্জনের ভিড়ে শামিল । সন্ধ্যা নামে, মেলায় আসা মানুষগুলোও ঘরে  ফেরে।

মেলার প্রয়োজনীয়তা

 আমার আমার গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিজীবি বা মৎস্যজীবি-মুসলমানের মিলিত বাস এই গ্রামে সবাই মেলার আনন্দের ভাগীদার হয়, কত মানুষের উপার্জনের পথ তৈরি করে দেয় এই রিক্সাভ্যানওয়ালা মানুষ নিয়ে আসে বা নৌকার মাঝি – উপার্জন হয় তাদেরও। তবুও সবথেকে বেশি করে এ মেলা আনন্দের এ মেলা মিলনের।

উপসংহার

 শহর কলকাতার উৎসবের উন্মাদনাকে পিছনে ফেলে বাবার সঙ্গে আমি যে প্রতি পুজোয় আমার গ্রাম উত্তর ২৪ পরগণার সৈদপুরে চলে যাই, সে যেমন শিশিরভেজা মাটি আর শিউলির গন্ধ নেওয়ার জন্য, তেমনই দশমীর দিন মেলার বাদামভাজা আর গরম জিলিপি জীবনের উন্নতাকেই আমার কাছে পৌঁছে দেয়।

আরও পরুনঃ

স্বামী বিবেকানন্দের রচনা 

দূর্গাপূজা-বাংলা রচনা

Leave a Comment