পুরী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা রচনা নিম্নে সহজ সরল ভাষায় বর্ণনা করা হল এবং সবশেষে PDF দেওয়া হল।
ভূমিকা
অনেকদিন ধরে একঘেয়ে কাজ করে যেতে কারোরই ভালো লাগে না। মাঝেমধ্যেই তাই ভ্রমণে বেরিয়ে পড়তে হয়। সব সময় যে খুব দূরেই যেতে হবে,তার কোন মানে নেই। কাছাকাছি কোথাও ঘুরতে গিয়েও,এই আনন্দ লাভ করা যায়। এবছর আমরা এই রকমই কাছাকাছি এক জায়গায় ভ্রমণে গিয়েছিলাম।
যাত্রা
আর পাঁচজনের মতো আমাদের পরিবারের সবাই খুব ঘুরতে ভালবাসে। গত জানুয়ারি মাসে বাবা হঠাৎ একদিন অফিস থেকে ফিরে বলল, সামনের সপ্তাহে আমরা পুরী যাব। সঙ্গে সঙ্গে মা বেড়াতে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করলো। আমি আর ভাই আমাদের সব জিনিস গোছাতে শুরু করলাম। জানুয়ারির এক কনকনে শীতের রাতে আমরা বেরিয়ে পড়লাম হাওড়া স্টেশনের দিকে। জগন্নাথ এক্সপ্রেস চড়ে রওনা হলাম পুরীর উদ্দেশ্যে। সকালে ট্রেন থেকে নেমে অটো করে হোটেলের কাছাকাছি এসে শুনতে পেলাম এক ভয়ঙ্কর গর্জন। সমুদ্র যেন আমাদের স্বাগত জানাচ্ছে।
প্রথম সমুদ্র দর্শন
সমুদ্রের ধারে এক হোটেলে আগে থেকেই ঘর বুক করা ছিল। স্টেশন থেকে বেরিয়ে রিকসায় করে হোটেলের দিকে রওনা দিলাম । কিছুদূর যাওয়ার পরেই কানে এক সমুদ্রের গর্জন । তারকারই চোখে পড়ল অন্তহীন নীলের বিস্তার। সাদা ফেনা বুকে নিয়ে ছুটে আসছে টেউ – এর পর ঢেউ। যতদূর দেখা যায় শুধু জল আর জল। হোটেলে পৌঁছে কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে চলে এলাম সমুদ্র তীরে, সেখানে লোকের ছড়াছড়ি কেউ বালিতে বসে আছে কেউ স্নান করছে, কেউ ঝিনুক খুজছে, কেউ বা ছবি তুলতে ব্যস্ত হঠাৎ দেখি একটি ঢেউ এসে ভিজিয়ে দিয়েছে পা। সমুদ্রে ম্লান করে দেহ মন ভরে গেল অদ্ভুত আনন্দে স্নান শেষে হোটেলে ফিরে দুপুরের আহার ও বিশ্রাম।
দর্শনীয় স্থান
শুধু পুরী নয়,পুরী থেকে আমরা কোনার্ক, উদয়গিরি, খণ্ডগিরি, চিলকা, লিঙ্গরাজ মন্দির, নন্দনকানন প্রভৃতি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছি। নানারকম কেনাকাটাও করেছি।কোনার্কের সূর্য মন্দিরের স্থাপত্য ও কারুকার্য আমাকে বিশেষভাবে মুগ্ধ করেছে।
মন্দির দর্শন
একদিন সকালে স্নান সেরে সকলে মিলে অটো করে চলে গেলাম মন্দিরে। সেখানে বাবার পরিচিত এক পান্ডা ছিল। তার বিধি মতো সমগ্র মন্দির দর্শন করে পূজো দিলাম। বিকেলে তার কথা মতোই আবার মন্দিরে গেলাম ৷ মন্দিরের চূড়াতে পতাকা উত্তোলন দেখলাম আশ্চর্য হয়ে গেলাম।আমারই মতো কিংবা আমার চেয়েও ছোট একটি ছেলে যেভাবে মন্দিরের গা বেয়ে চুড়ায় উঠে পতাকা টাঙিয়ে দিল, তা ভাবাই যায় না।
উপসংহার
পুরী থেকে ফেরার সময় আমার চোখে জল এসে গিয়েছিল। পুরী ভ্রমণই আমাকে প্রথম সমুদ্রের সঙ্গে পরিচয় করিয়েছে।তাই সারা জীবন এই ভ্রমণ আমার মনে থাকবে। মনে মনে ঠিক করেছি, সুযোগ পেলেই আবার সমুদ্রের টানে পুরী যাব ।
Download PDF : পুরী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা রচনা
আরও পড়ুনঃ