স্বামী বিবেকানন্দ রচনা ক্লাস 6

স্বামী বিবেকানন্দ রচনা বাংলায়

স্বামী বিবেকানন্দ রচনা স্কুলের যে কোন ক্লাসের পরীক্ষায় এসে থাকে তাই সুন্দর ভাবে স্বামী বিবেকানন্দ সম্পর্কে রচনা নিম্নে বর্ণনা করা হল।

সূচনা

ভারত মাতার বক্ষে যুগে যুগে জন্ম নিয়েছেন শত শত বিখ্যাত বাঙালি সন্তান। স্বামী বিবেকানন্দ তাদের মধ্যে এমন একজন ব্যক্তিত্ব যিনি সারাজীবন ধরে জাতিভেদ প্রথা, কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামি এবং অশিক্ষার বিরুদ্ধে লড়াই করে গেছেন।

জন্ম ও বংশ পরিচয়

কলকাতার অন্তর্গত সিমলার বিখ্যাত দত্ত পরিবারে ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দের ১২ই জানুয়ারি বিবেকানন্দের জন্ম হয়। বাল্যকালে তাঁর নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত। পিতার নাম ছিল বিশ্বনাথ দত্ত এবং যাতা ছিলেন ভুবনেশ্বরী দেবী। ছোটবেলায় তাঁর ডাকনাম ছিল বিলে। বালক বয়সে একদিকে তিনি যেমন ছিলেন অসাধারণ মেধাবী, অন্যদিকে তিনি ছিলেন ভীষণ দুরন্ত।

শিক্ষা

প্রাথমিক শিক্ষা শেষ হয় যা-বাবার কাছে । মাত্র ১৪ বছর বয়সে মেট্রোপলিটন স্কুল থেকে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর তিনি স্কটিশচার্চ কলেজ থেকে বি.এ. পরীক্ষায় সফল হন। এই সময় তাঁর মনের মধ্যে ঈশ্বর চিন্তা শুরু হয়। ঈশ্বর সম্বন্ধে তাঁর জিজ্ঞাসার অবসান ঘটে যখন তিনি ঠাকুর রামকৃষ্ণের সংস্পর্শে আসেন।তিনি রামকৃষ্ণদেবের কাছে দীক্ষা নেন, শুরু হয় আধ্যাত্মিক জীবন।

কর্মজীবন ও কৃতিত্ব

 আধ্যাত্মিক জীবন গ্রহণ করার পর তিনি সন্ন্যাস-ধর্ম গ্রহণ করেন। তার পরই শুরু হয় দেশ ভ্রমণ। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে দেশবাসীর দুঃখদুর্দশার কথা অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করেন। তিনি বিভিন্ন জায়গায় ‘রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। সাধনার জন্য তিনি “বেলুড় মঠ” প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৯৩ খ্রিঃ আমেরিকায় শিকাগো শহরে বিশ্বধর্ম মহাসভায় হিন্দুধর্মের হয়ে বক্তৃতা রাখার সুযোগ পান। তিনি আমেরিকাবাসীকে ভ্রাতা ও ভগিনী বলে বক্তৃতা আরম্ভ করলে সকলে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হন। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে বোঝান হিন্দুধর্মের মাহাত্ম্য। তাঁর বক্তৃতা শুনে সকলেই মুগ্ধ হন। আমেরিকা ও ইউরোপের বহু মানুষ তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। মার্গারেট নোবেল তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করে ভারতে চলে আসেন। পরে যিনি আমাদের নিকট ‘ভগিনী নিবেদিতা নামে পরিচিত হন।

সাহিত্যকীর্তি

শুধু কর্মজগৎই নয়, চিন্তা ও মননশীলতার ক্ষেত্রে স্বামীজি মানবতার বাণী প্রচার করে গেছেন। তাঁর রচিত গ্রন্থগুলি হল –“পরিব্রাজক”,”প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য”, “বর্তমান ভারত” প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য তিনি স্বপ্ন দেখতেন সমৃদ্ধ, শিক্ষিত, সংস্কারহীন ভারতবর্ষের, ভারতবর্ষই ছিল তার শৈশবের শিশুশয্যা, যৌবনের উপবন আর বার্ধক্যের বারানসী।

উপসংহার

এই বীর-সন্ন্যাসী পৃথিবীতে বেশি দিন স্থায়ী হননি। ১৯০২ খ্রিঃ ৪ঠা জুলাই মাত্র ৩৯ বছর বয়সে বেলুড় মঠে ধ্যানরত অবস্থায় তাঁর মহাপ্রয়াণ ঘটে।

আরও পড়ুন:

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু রচনা

দূর্গাপূজা-বাংলা রচনা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা

একটি শীতের সকাল রচনা

Leave a Comment