বায়ু দূষণের ১০টি কারণ
“বায়ু দূষণ “ বর্তমান পরিস্থিতিতে ভয়াভয় কারন হয়ে, দাঁড়িয়েছে যার ফলে মানুষকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বায়ু দূষণের ফলে মানুষের বিভিন্ন রোগের পরিমাণ বেড়ে গেছে। পরিবেশ ভয়াভয় ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই পরিস্থিতির থেকে মুক্তি পেতে গেলে মানুষকে সচেতন হতে হবে এবং পরিবেশ রক্ষার্থে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
বায়ুদূষণ কাকে বলে?
এক বা একাধিক দূষক পদার্থ বায়ুতে মিশে যখন বায়ুর উপাদান গুলির ভারসাম্য নষ্ট করে এবং এতে জীবজগৎ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন তাকে বায়ুদূষণ বলে।
বায়ু দূষণের ১০টি কারণ
বায়ু দূষণের কারন গুলি হল –
১.দাবানল – বজ্রপাত, লাভাপ্রবাহ, গাছে গাছে ঘর্ষন প্রভৃতি কারণে বনভূমিতে আগুন লেগে দাবানলের সৃষ্টি হয়। এভাবে বনভূমি পুড়ে গিয়ে কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোঅক্সাইড, ছাই ইত্যাদি বায়ুদূষন ঘটায়।
২.অগ্ন্যুৎপাত – অগ্ন্যুৎপাতের সময় আগ্নেয়গিরি থেকে প্রচুর পরিমানে কার্বন মনোঅক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড, হাইড্রোজেন সালফাইড নির্গত হয়ে বায়ুকে দূষিত করে। অগ্ন্যুৎপাতের সময় মোট সালফারের প্রায় ৭০% বাতাসে মিশে।
৩. ধূলিঝড় – মরুপ্রায় ও মরুঅঞ্চলে দিনের বেলায় প্রচন্ড উত্তাপে ধূলিঝড়ের সৃষ্টি হয়। এই ধুলিঝরের ফলে অতি সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম ধূলিকনা বাতাসে মিশে বায়ুর ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়।
৪. পচন – মৃত জীবদেহের পচনের ফলে অনেক ধরণের দূর্গন্ধ যুক্ত গ্যাস যেমন মিথেন, হাইড্রোজেন সালফাইড ইত্যাদি বাতাসের সাথে মিশ্রিত হয়ে বায়ু দূষণ ঘটায়।
৫.মহাজাগতিক বস্তু – মহাকাশ থেকে ভূপৃষ্টে আগত উল্কাপিন্ড, মহাজাগতিক ধূলিকনা প্রভৃতি বাতাসের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে বায়ুদূষণ ঘটায়।
৬. কলকারখানা – শিল্পাঞ্চলের কারখানা থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোঅক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, হাইড্রোকার্বন, ধাতব কনা, ধোঁয়া প্রভৃতি প্রচুর পরিমানে বাতাসে মিশ্রিত হয়ে বাতাসকে দূষিত করে।
৭.যানবাহন – বিভিন্ন যানবাহনে জীবাশ্ম জ্বালানীর (পেট্রোল ও ডিজেল) দহনের ফলে বিভিন্ন ক্ষতিকার গ্যাস নির্গত হয়। এগুলির মধ্যে অন্যতম প্রধান বায়ুদূষক কার্বন মনোক্সাইডের প্রায় ৭০ শতাংশ এই যানবাহন থেকে নির্গত হয়। এছাড়া যানবাহনের ধোয়ায় প্রচুর নাইট্রোজেনের অক্সাইড থাকে যা বায়ুকে দূষিত করে তোলে। যানবাহনের আধিক্যের জন্য শহরাঞ্চলের বাতাস বেশি দূষিত হয়।
৮. তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্ৰ – কয়লা নির্ভর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নাইট্রাস অক্সাইড, সালফারের অক্সাইড, কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোঅক্সাইড প্রভৃতি গ্যাস ছাড়াও প্রচুর পরিমানে ছাই বাতাসে মিশে বায়ুদূষন ঘটায়। পৃথিবীর মোট সালফার দূষণের প্রায় ৩০ শতাংশ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার দহনের ফলে বাতাসে মিশ্রিত হয়।
৯. পারমানবিক কেন্দ্র – পরমানু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুল্লিথেকে প্রচুর পরিমানে তেজস্ক্রিয় পদার্থ বেরিয়ে বাতাসে মিশে বায়ুকে দূষিত করে।
১০. জনসংখ্যা বৃদ্ধি – অতিরিক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বায়ু দূষিত হয়।
বায়ু দূষণ প্রজেক্ট pdf
বায়ু দূষণের কারণ ও ফলাফল
বায়ু দূষণের কারণ গুলি হল-
১) অগ্ন্যুৎপাতের ফলে নিঃসৃত সালফার ডাইঅক্সাইড , কার্বন মনোঅক্সাইড বায়ু দূষণ ঘটায়।
২) পরমানু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুল্লিথেকে প্রচুর পরিমানে তেজস্ক্রিয় পদার্থ বেরিয়ে বাতাসে মিশে বায়ুকে দূষিত করে।
৩) মহাকাশ থেকে ভূপৃষ্টে আগত উল্কাপিন্ড, মহাজাগতিক ধূলিকনা প্রভৃতি বাতাসের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে বায়ুদূষণ ঘটায়।
৪) মহাকাশ থেকে ভূপৃষ্টে আগত উল্কাপিন্ড, মহাজাগতিক ধূলিকনা প্রভৃতি বাতাসের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে বায়ুদূষণ ঘটায়।
৫) অতিরিক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বায়ু দূষিত হয়।
ফলাফল
১) ধোয়াশার প্রভাবে চোখ জ্বালা করে। দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়।
২) সালফার ডাইঅক্সাইডের প্রভাবে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। ব্রঙ্কাইটিস, যক্ষ্মা প্রভৃতি রোগ হয়।
৩) নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইডের জন্য শ্বাসকষ্ট হয়। ফুসফুসের ক্ষতি হয়। নিউমোনিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৪) কার্বন মনোঅক্সাইডের জন্য রক্তের অক্সিজেন সংবহন ক্ষমতা বিঘ্নিত হয়।
৫) বেঞ্জপাইরিনের (Benzopyrene. C20H12) জন্য ক্যানসার হয়। এখানে উল্লেখ করা দরকার যে, রাস্তায় দেওয়ার জন্য পিচ গলানোর সময়ে যে ধোঁয়া বেরোয়, তাতে বেঞ্জপাইরিন জাতীয় যৌগ পাওয়া যায়।
৬) বাতাসে ভাসমান সিসা, বালি, কয়লার গুঁড়ো ইত্যাদি শ্বাসনালি ও ফুসফুসের ক্ষতি করে। স্নায়ুরোগের কারণ হয়।
Air Pollution FAQ:-
1. বায়ু দূষণের কারণ ও ফলাফল কি?
বায়ু দূষণ প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক ভাবে হয়ে থাকে। এর ফলে পরিবেশ ও মানব জীবনের ক্ষতি হয়।
2. বায়ু দূষণের উৎস কি?
বায়ু দূষণের উৎস গুলি হল- কলকারখানা ও যানবাহণের ধোঁয়া, তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্ৰর ধোঁয়া, সিগারেটের ধোঁয়া।
3. বায়ু দূষণের তিনটি প্রভাব কি কি?
বায়ু দূষণের ফলে শ্বাসনালি ও ফুসফুসের ক্ষতি করে,ব্রঙ্কাইটিস, যক্ষ্মা প্রভৃতি রোগ হয়।