বর্ষাকাল রচনা Class1-10 Free PDF

বর্ষাকাল রচনা একটি খুব সুন্দর রচনা। স্কুলের পরীক্ষায় এসে থাকে তাই সহজ সরল ভাবে বর্ষাকাল রচনাটি বর্ণনা করা হল।

ভূমিকা

বাংলার প্রকৃতিতে রূপের পসরা সাজিয়ে ঋতুর পরে ঋতু আসে,  ছয় ঋতুর মধ্যে বর্ষা ঋতুর স্থান দ্বিতীয়। বর্ষা আরম্ভ হয় জ্যৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি থেকে এবং তার প্রভাব থাকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত। বর্ষার আগমনে গাছপালা, মানুষ,জীবজন্তু আনন্দে মেতে ওঠে।

বর্ষার সময়কাল ও কারণ

বর্ষাকাল ঋতুচক্রের দ্বিতীয় ঋতু বাংলার আষাঢ় ও শ্রাবণ এই দুই মাস নিয়ে বর্ষাকাল যার পুরো সময় জুড়ে থাকে ঝর ঝর বৃষ্টিধারা আর প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দয। এই বৃষ্টির রয়েছে ভৌগৌলিক কারণ গ্রীষ্মকালে মৌসুমী বায় ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং উত্তর-পূর্বে বয়ে যায় প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প। হিমালয়ের গায়ে তা বাধ প্রাপ্ত হয়ে ভারত ও বাংলাদেশে প্রচুর পরিমানে বৃষ্টিপাত ঘটায়।

প্রাকৃতিক অবস্থা

আষাঢ়-শ্রাবণ এই দুই মাস কখনো অবিশ্রান্ত বর্ষণ আবার কখনো টিপ টিপ বৃষ্টি পড়ে। নদী-নালা পথঘাট জলে থৈ থৈ করে। বর্ষায় আকাশ থাকে কালো মেঘে আচ্ছন্ন, সাথে মেঘ ডাকে, বিদ্যুৎ চমকায়, বজ্রপাত হয় কখনো ঝিরিঝিরি আবার কখনো ঝমঝম করে অঝোর ধারার বৃষ্টি পড়ে সারাদিন, মাঝে মধ্যে সূর্যের দেখাও পাওয়া যায়না। বর্ষার আগমনে নির্জীব প্রকৃতি যেন জীবন ফিরে পায় এবং সজীব হয়ে ওঠে। বর্ষাকালে কদম,  কেতকী,জুঁই ফুল ফোটে। কৃষকরা আনন্দে মেতে ওঠে। চারিদিকে প্রাণের সাড়া জেগে ওঠে। ব্যাঙের কলরবে চারিদিক মুখর হয়ে ওঠে বর্ষাকালে |

বর্ষাকালের উপকারীতা

বর্ষাকালে প্রকৃতি নবজীবন লাভ করে বাতাস বিশুদ্ধ ও শীতল হয়ে যায়,  বর্ষার নতুন জ্বলে মাছ এবং জলজ প্রাণীরা প্রাণ ফিরে পায়। বৃষ্টির ফলে কৃমিজমি নরম হয়ে যায় এবং জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায় কৃষকরা বিভিন্ন প্রকার ধান, পাট, সব্জির ফলন ঘটায় চাষীদের মুখে হাসি ফোটে, এই সময় দেখা যায় রকমারি ফলের সম্ভার  যার মধ্যে তাল, আনারস, জাম, পেয়ারা, আতা ইত্যাদির ফলন হয় প্রচুর পরিমানে ফুলের মধ্যে শাপলা-শালুক, কদম, কেয়া, জুঁই, গন্ধরাজ রজনীগন্ধার গন্ধে এই ঋতুকে বিমোহিত করে তোলে, সব মিলিয়ে প্রকৃতি নতুন রূপ ধারণ করে।

বর্ষার অপকারীতা

বর্ষাকাল যে সবসময়ই মানুষের মুখে হাসি ফোটায় তা নয়, খরস্রোতা নদী মাঝে  মাঝে লাগামছাড়া হয়ে বান ডাকে  ভাসিয়ে নেয় উপকূলের অনেক বসতবাড়ি, খেতের ফলন, গবাদি পশু, সৃষ্টি হয় বন্যা পরিস্থিতি বিভিন্ন মহামারী রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়, জ্বর, ডায়রিয়া, আমাশয় ইত্যাদি রোগের প্রকোপে অনেক লোকের প্রানহানি ঘটে, এছাড়া সাপ ও পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়ে যায়, বর্ষাকালে রাস্তাঘাট কর্দমাক্ত ও পিছিল হয়ে যায় এতে দুরঘটনার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়, চলাচলেও অসুবিধা হয়, বন্যা পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী থেকে বাজার দর সবকিছুর বেড়ে যায় দাম ফলে দিনমজুর গরীব মানুষের জীবন অতিবাহিত করা কষ্টকর হয়ে ওঠে।

মানব মনে বর্ষার প্রভাব

বসন্ত যদি ঋতুরাজ হয় তবে বর্ষা হল ঋতুরানী, বর্ষার সজল প্রাণবন্ত রুপ মানুষের মনকে দারুন ভাবে প্রবাহিত করে, বিরহী মনকে আরো কাতর করে তোলে, বর্ষা মানুষকে কর্মবিচ্ছিন্ন করে ভাব-জগতের গভীরে কল্পনা বিলাশী হয়ে উঠতে প্রেরণা জোগায়।

উপসংহার

বর্ষা যেমন মানুষের মনে শান্তি নিয়ে | আসে, ঠিক তেমনি আবার অনেক ক্ষয়ক্ষতি ও করে। প্রচুর বৃষ্টিপাতের জন্য অনেক জায়গায় বন্যা দেখা যায়। বর্ষার অপকারের চেয়েও উপকার অনেক বেশি। বর্ষা না হলে আমাদের দেশ মরুভূমিতে পরিনত হত শুধু বর্ষার কারণেই এদেশ সুজলা-সুফলা-শস্য-শ্যামলা অনিন্দ্য সুন্দর হয়েছে। তাই সব মানুষ প্রতিবছর এই ঋতুর জন্য প্রতীক্ষা করে থাকে।

শীতকাল রচনা

FAQ:-

1. বর্ষাকালে কি কি ফুল পাওয়া যায়?

বর্ষাকালে কদম,  কেতকী,জুঁই ফুল ফোটে।

2. ভারতের অর্থনীতিতে বর্ষাকালের প্রভাব?

ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে বর্ষাকালের প্রভাব অতি গুরুত্ব ভুমিকা পালন করে।

3.ভারতের ধান উৎপাদনে প্রথম রাজ্য কোনটি?

ভারতের ধান উৎপাদনে প্রথম রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ।

4. ধান উৎপাদনে বিশ্বে ভারতের স্থান কত?

ধান উৎপাদনে বিশ্বে ভারতের স্থান কত দ্বিতীয়।

আরও পড়ুনঃ

বসন্তকাল রচনা

বিশ্ব পরিবেশ দিবস রচনা

Leave a Comment