নমস্কার বন্ধুরা, আজ আমরা তোমাদের জন্য জল দূষণ রচনা বর্ণনা করছি আশা রাখছি সবার ভালো লাগবে।
ভূমিকা
এই পৃথিবীর প্রায় 71 শতাংশ জলভাগ হলেও সেই জলের 1 শতাংশেরও কম হল সুপেয় জল। তাই মানুষের সরাসরি ব্যবহারের জন্য জলের জোগান আসলে খুব কম। এই অবস্থায় আমাদের অনেক বেশি সচেতন হওয়া দরকার, যাতে সামান্য যেটুকু জল মানুষ ব্যবহারের জন্য পায়, তা যেন ব্যবহারযোগ্য হয়। দূষণমুক্ত হয়।
জলদূষণ কাকে বলে?
জলের সঙ্গে কোনো অবাঞ্ছিত পদার্থ মিশে যাওয়ার ফলে যদি জলের ভৌত, রাসায়নিক ও জৈব বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন হয় এবং তার ফলে জলজ উদ্ভিদ, প্রাণী ও মানুষের ক্ষতির আশঙ্কা থাকে, তবে জলের সেই খারাপ অবস্থাকে জলদূষণ বা ওয়াটার পলিউশন (Water pollution) বলে।
জলদূষণের কারণগুলি
জল নানা কারণে দূষিত হয়। যেমন— (১) ঘর-গৃহস্থালির দৈনন্দিন আবর্জনা জলকে দূষিত করে। (২) শিল্পজাত আবর্জনা ও বর্জ্য পদার্থ জলে মিশে গেলে জল দূষিত হয়। (৩) কৃষিজাত আবর্জনার জন্য জল দূষিত হয়। (৪) বৃষ্টির পরে জনবসতি থেকে ধুয়ে আসা ময়লা জলের কারণে জল দূষণ ঘটে। (৫) ডিটারজেন্ট-এর প্রভাবে জল দূষিত হয়। (৬) সমুদ্রজলে ভাসমান তেল সমুদ্রজলকে দূষিত করে। (৭) অ্যাসিড বৃষ্টিও জলকে দূষিত করে। ৮) জলের তাপ বৃদ্ধি পেলে জল দূষিত হয়। (৯) জলে রোগজীবাণু বৃদ্ধি পেলে জল দূষণ ঘটে।
জলদূষণের প্রভাব
মানবদেহে জলদূষণের প্রভাব
(১) দূষিত জল থেকে টাইফয়েড (typhoid), জন্ডিস (jaundice), আমাশয় (dysentery), কলেরা (cholera), আন্ত্রিক (gastroenteritis), পেট খারাপ (diarrhoea), টিবি (tuberculosis), হেপাটাইটিস (hepatitis), চর্মরোগ (skin disease), আর্সেনিক দূষণ (arsenicosis) প্রভৃতি রোগ মহামারি আকার ধারণ করতে পারে।
(২) অ্যাসবেস্টস জাতীয় রাসায়নিক পদার্থে দূষিত জল থেকে অ্যাসবেসটোসিস (asbestosis), ক্যানসার (lung cancer) প্রভৃতি রোগ হতে পারে।
(৩) তামা, ক্লোরিন, পারদ (পারদ দূষণের জন্য মিনামাটা রোগ), নিকেল, লোহা, সায়ানাইড মিশ্রিত জল থেকে চর্মরোগ ও পেটের অসুখ দেখা দেয়।
পরিবেশের ওপর জলদূষণের প্রভাব
(১) দূষিত জলে কৃষিকাজ করা হলে ব্যাকটিরিয়া ও মাটির মধ্যে বসবাসকারী জীবাণুর (micro- organism) ক্ষতি হয়। এতে মাটির উর্বরতা হ্রাস পায়।
(২) দূষিত ভৌমজল মাটিতে ক্ষারের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।
(৩) দূষিত জলে উদ্ভিদের শারীরবৃত্তিয় (physiological) পরিবর্তন ঘটে। ফলে শস্যের গুণগত মান নষ্ট হয়। কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হয়।
সিদ্ধান্ত
বর্তমান সমীক্ষা থেকে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় যে —
(1) শিক্ষার হার যেখানে ভালো এবং আয় সংগতিপূর্ণ, সেখানে মানুষ বাড়িতে পরিস্ফুত পানীয় জলের সরবরাহ সুনিশ্চিত করার চেষ্টা করেন।
(2) ব্যক্তিগত স্তরে জলকে দূষণমুক্ত রাখার জন্য তাদের মধ্যে অধিকাংশই বাড়িতে ফিলটার ব্যবহার করেন।
(3) সামাজিক স্তরে মেলামেশার সুযোগ বেশি বলে, জলদূষণ জাতীয় সমস্যার ব্যাপারেও তারা ওয়াকিবহাল। অর্থাৎ সচেতনতার মাত্রা বেশি।
আরও দেখুনঃ